বোয়িংয়ের পর এবার এয়ারবাসের ‘ডিপ্লোম্যাটিক লবিং’, ঢাকা মিশনে ৪ কূটনীতিক
বাংলাদেশের বিমান খাতে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে এবার কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে ইউরোপের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ঢাকায় ফ্রান্স-জার্মান দূতাবাসে ‘বাংলাদেশের এভিয়েশন গ্রোথ’ নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেন তারা। ফ্রান্স-জার্মান দূতাবাসে আলোচনা সভার আয়োজনটি এয়ারবাসের হলেও এতে প্রভাবশালী ৪ ইউরোপীয় কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।
তারা হলেন– ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজ, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে ১৪টি প্লেন বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে যার মধ্যে রয়েছে– ১০টি এয়ারবাস এ-৩৫০ এবং ৪টি এয়ারবাস এ-৩২০নিও। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক শুল্ক সমন্বয় করতে বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে ২৫টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতোমধ্যে বিমানের কাছে ১৪টি প্লেন বিক্রির প্রস্তাব দিয়েও রেখেছে মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করছে। তবে আকর্ষণীয় প্রস্তাবের সঙ্গে এবার কূটনীতিভাবেও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে এয়ারবাস।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় অবস্থিত ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা বলেছেন, বিমানের বর্তমান বহরের পাশাপাশি এয়ারবাসের উড়োজাহাজ যুক্ত হলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নমনীয়তা, স্থিতিশীলতা ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা আরও বাড়বে।
এ সময় ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের বিমান শিল্পের কেন্দ্রে অবস্থান করছে এয়ারবাস। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের অনন্য সমন্বয়ই এয়ারবাসকে ইউরোপীয় শিল্পগৌরবের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং একই সঙ্গে এটি বিশ্বজুড়ে বিমান সংস্থাগুলোর এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। এই কারণেই আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের বিমান খাতের এই গুরুত্বপূর্ণ বিকাশ পর্বে এয়ারবাস একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারে। দ্রুত বর্ধনশীল সংযোগের প্রয়োজন এবং কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ একটি আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব হিসেবে গড়ে ওঠার সব উপাদানই ধারণ করছে।
তিনি বলেন, এই প্রেক্ষাপটে এয়ারবাস বিমানের বহর বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে আরও নমনীয়, স্থিতিশীল ও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে একটি সার্বিক ও প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাব দিয়েছে– যা বিশ্বের অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলোর সাফল্যের অভিজ্ঞতা থেকেই প্রমাণিত।
ঢাকার জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সম্প্রসারণের ফলে বিমানের এখন প্রয়োজন আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উড়োজাহাজ, যা সরবরাহে এয়ারবাস অত্যন্ত ভালো অবস্থানে রয়েছে।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক বিমান পরিবহন হাব হওয়ার লক্ষ্যে অবিচল সমর্থন দিয়ে যাবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত এয়ারবাসের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বিমান খাতের সম্ভাবনা তুলে ধরেন এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সরকারের সঙ্গে তাদের চলমান সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে এয়ারবাসের কমার্সিয়াল সেলস ডিরেক্টর (চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ
বাংলাদেশ) রাফায়েল গোমেজ নয়া বলেন, বিশ্বে ৪০ টির বেশি দেশে এয়ারবাস দিয়ে
ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি এযাবৎকালে ২৫ হাজার ১২৯টি এয়ারক্রাফট
বিক্রি করেছে যার মধ্যে ১৬ হাজার ৪৭০টি ইতোমধ্যে ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল এবং শ্রীলংকার মতো
দেশগুলোতে পরিচালিত ফ্লাইটের ৭২ শতাংশ এয়ারক্রাফট এয়ারবাস প্রতিষ্ঠানের।
এছাড়া
অন্যান্য বিমান থেকে এয়ারবাসের পরিচালন খরচ ২০ শতাংশ কম। বাংলাদেশে
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সফলতার সঙ্গে ৩টি এয়ারবাস ব্যবহার করছে। আশা করছি,
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও নিজেদের বহরের জন্য এয়ারবাসকে নির্বাচিত করে
সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
Make Comment
Login to CommentPopular News
Subscribe to News Letter
Latest News
Weather Outlook
Clear
Dhaka, Bangladesh
Wind: 10.8 kmph · Precip: 0 mm · Pressure: 1009 mb
26.1°C
Thu
27.5°C
Fri
27.1°C
Sat
25.7°C