দুবাইয়ের জাতীয় বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইন্স আগামী আট বছরে প্রায় ৫,০০০ পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে। ক্রমবর্ধমান ভ্রমণ চাহিদা পূরণে সম্প্রসারণ কার্যক্রম জোরদার করার অংশ হিসেবে এই ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির কো-ডেপুটি প্রেসিডেন্ট ও চিফ অপারেটিং অফিসার আদেল আহমেদ আল রেদা।

মঙ্গলবার এমিরেটস ফ্লাইট ট্রেনিং একাডেমি (ইএফটিএ)-তে ক্যাডেট পাইলট প্রোগ্রামের ষষ্ঠ গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে তিনি এই উচ্চাভিলাষী নিয়োগ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন বলে জানিয়েছে গালফ নিউজ।

আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল খাতের সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইন্সগুলোর সম্প্রসারণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ১০,৩০০ পাইলটের প্রয়োজন হবে। এ পরিস্থিতিতে এমিরেটসের মতো বড় সংস্থাগুলোর জন্য দক্ষ পাইলট নিয়োগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

এমিরেটস বর্তমানে বোয়িং ৭৭৭এক্স, ৭৭৭এফ, ৭৮৭ এবং এয়ারবাস এ৩৫০-৯০০সহ প্রায় ৩৭৫টি নতুন ওয়াইডবডি উড়োজাহাজ সংগ্রহের অঙ্গীকার করেছে। গত মাসে দুবাই এয়ার শোতে ৭৭৭এক্স ও এ৩৫০ বিমানের অর্ডার বাড়ানোর পর পাইলট নিয়োগের চাপ আরও বেড়েছে।

নিয়োগ কৌশল নিয়ে আল রেদা বলেন, “একটি একাডেমির পক্ষে এই বিপুল চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা একাধিক উৎস থেকে পাইলট সংগ্রহ করব—নিজস্ব একাডেমি, সরাসরি অভিজ্ঞ পাইলট এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের মাধ্যমে।”

এমিরেটস ফ্লাইট ট্রেনিং একাডেমি ইতোমধ্যে ৩০০-এর বেশি পাইলট তৈরি করেছে, যারা বর্তমানে সংস্থাটির উড়োজাহাজ পরিচালনা করছেন। এসব ক্যাডেট পাইলটকে শুরু থেকেই এমিরেটসের কার্যক্রম ও মানসিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

৫,০০০ পাইলট নিয়োগের এই লক্ষ্য এমিরেটস গ্রুপের বৃহত্তর জনবল নিয়োগ পরিকল্পনার অংশ। চলতি অর্থবছরে গ্রুপটি ৩৫০টি ভিন্ন পদে ১৭,৩০০ জন কর্মী নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে এয়ারবাসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আঞ্চলিক বিমান চলাচল বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ২০৩৪ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ৬০ হাজারের বেশি পাইলটের প্রয়োজন হবে। এমিরেটস গ্রুপ ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে ১৫০টি শহরে ২,১০০-এর বেশি নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। গত অর্থবছরে তারা পেয়েছে প্রায় ৩৭ লাখ আবেদন।

২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এমিরেটস গ্রুপে ৪১ হাজারের বেশি পেশাজীবী যুক্ত হয়েছেন, ফলে সংস্থাটির মোট কর্মীসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ২১ হাজারে।