নতুন আইনে ৫ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধের ঝুঁকিতে পড়তে পারে
নিজস্ব প্রতিবেদক
| Published: Sunday, November 23, 2025
প্রস্তাবিত ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০২৫ বাস্তবায়িত হলে দেশজুড়ে প্রায় ৫ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এমনটাই সতর্ক করেছেন খাতসংশ্লিষ্ট নেতারা।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)–এর সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোট খসড়া আইনটিকে 'অবাস্তব, অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসাত্মক এবং সম্ভাব্যভাবে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে' বলে মন্তব্য করে।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে জোটের আহ্বায়ক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টিপু বলেন, এই অধ্যাদেশ কার্যকর হলে ব্যাপক হারে ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যাবে এবং বিমান পরিবহন, পর্যটন, শ্রম অভিবাসন ও হজ-উমরাহ খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, “এই অধ্যাদেশ আমাদের শিল্পটাই বন্ধ করে দেবে।” খসড়ার ৫ নম্বর ধারায় আন্তঃএজেন্সি টিকিট কেনা-বেচা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সির টিকে থাকা অসম্ভব করে তুলবে। অধিকাংশ এজেন্সির এয়ারলাইন্সের সরাসরি টিকিট ইস্যু করার অনুমোদন নেই; তারা টিকে থাকে বড় এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট সংগ্রহ করেই।
তিনি আরও বলেন, ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত সিকিউরিটি ডিপোজিট ছোট ও মাঝারি এজেন্সিগুলোর ওপর ‘অসম্ভব চাপ’ তৈরি করবে। ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী পরিবারের বাইরে ব্যবসা হস্তান্তর করা যাবে না এবং একই ঠিকানায় একাধিক সেবা পরিচালনা করতে রিক্রুটিং এজেন্টদের নিষেধ করা হয়েছে।
টিপুর মতে, “নতুন অধ্যাদেশের অনেক সংশোধনীই বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।” জাতীয় অন্যান্য আইনে একই ঠিকানায় একাধিক ব্যবসা পরিচালনা এখনো বৈধ। বহু রিক্রুটিং ও হজ এজেন্সি বহুদিন ধরে একই অফিস থেকে ট্রাভেল সেবা দিয়ে আসছে।
জোটের সদস্যসচিব মোহাম্মদ জুমান চৌধুরী সতর্ক করে বলেন, খসড়া অধ্যাদেশ মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বিবেচনায় নেয়নি। “এটা বাস্তবায়ন হলে শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, অসংখ্য পরিবারের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।” সীমিত ব্যাংক গ্যারান্টির কারণে ছোট এজেন্সিগুলো বড় এজেন্সির ওপরই নির্ভরশীল।
বিদ্যমান আইনেই শাস্তি প্রদানের পর্যাপ্ত সুযোগ থাকার পরও খসড়ায় শাস্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে তিন বছর কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানায় পৌঁছেছে, যা বক্তাদের মতে ‘অতিরিক্ত এবং অযৌক্তিক’। ৯ নং ধারা অনুযায়ী শুনানি ছাড়াই কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স স্থগিত করতে পারবে।
নেতারা আরও বলেন, সহস্রাধিক ব্যবসাকে প্রভাবিত
করবে এমন বড় ধরনের সংস্কার সংসদীয় পর্যালোচনা ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আনা উচিত
নয়। নির্বাচিত সরকারের স্বচ্ছতা ও বৈধতা ছাড়া এমন পরিবর্তন গ্রহণযোগ্য নয়।
মানববন্ধন শেষে জালাল উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দেয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, অধ্যাদেশ কার্যকর হলে অনেক ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে মালিক-কর্মচারীরা কর্মহীন হবে এবং পুরো পর্যটন খাত অচল হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের আইন ও তার ২০২১ সালের
সংশোধনীর পরিবর্তে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নতুন অধ্যাদেশ প্রণয়ন
করতে যাচ্ছে।
Make Comment
Login to CommentPopular News
Subscribe to News Letter
Latest News
Weather Outlook
Clear
Dhaka, Bangladesh
Wind: 7.2 kmph · Precip: 0 mm · Pressure: 1012 mb
19.9°C
Tue
22.3°C
Wed
22.1°C
Thu
21.6°C