‘সাশ্রয়ী ভাড়া’ দাবি, প্রবাসীদের সমালোচনার মুখে বিমান বাংলাদেশ
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মধ্যপ্রাচ্য রুটে ‘সাশ্রয়ী ভাড়া’ দেওয়ার দাবি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সংস্থাটির সোমবারের একটি প্রচারণামূলক ফেসবুক পোস্টে করা মন্তব্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট প্রতিক্রিয়ার ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশই নেতিবাচক। ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মাত্র ৫–৭ শতাংশ এবং ৮–১০ শতাংশ মন্তব্য ছিল নিরপেক্ষ বা রুট-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা।
অস্বাভাবিক ভাড়া বৈষম্য নিয়ে ক্ষোভ
মন্তব্যকারীদের অধিকাংশই বিমানের টিকিট নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে জেদ্দা–ঢাকা ও ঢাকা–জেদ্দা রুটে বিপুল ভাড়া বৈষম্য নিয়ে ক্ষোভ ছিল বেশি।
অনেকে জানান, জেদ্দা–ঢাকা ভাড়া মাত্র ৬৫০ সৌদি রিয়াল, কিন্তু ঢাকা–জেদ্দা টিকিটের দাম ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। দুবাই রুটেও একই চিত্র—ইনবাউন্ড টিকিট ১৫ হাজার টাকা, আউটবাউন্ড ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মাসুম পাঠওয়ারীর জেদ্দা রুটের ভাড়া-অসাম্য নিয়ে করা মন্তব্যটি ২১টি লাইক পেয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়। রাসেল মিয়ার ‘এই রুটের টিকিটই সবচেয়ে বেশি দামি’ মন্তব্য ৯টি লাইক পায়। নাজরুল নাজরুর বাহরাইন রুট চালুর দাবি তুলে করা মন্তব্য ৭টি লাইক লাভ করে।
সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ
বহু প্রবাসী মন্তব্যে দাবি করেন, টিকিট বাজারে একটি সিন্ডিকেট প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে, যারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ভাড়া বাড়িয়ে রাখে। ‘সিন্ডিকেট ভাঙুন’ ও ‘স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন’—এমন আহ্বান বহু মন্তব্যে উঠে আসে।
সেবার মান নিয়েও ক্ষোভ
আরও বহু মন্তব্যে দেখা যায়—ফ্লাইট বিলম্ব, লাগেজ হারানো বা ক্ষতি, কেবিন ক্রুর অ-ব্যবহারিক আচরণ—এসব নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ। কেউ কেউ বিমানে ভ্রমণ বর্জনেরও আহ্বান জানান।
রুট সম্প্রসারণের জোর দাবি
নিরপেক্ষ ও তথ্যভিত্তিক মন্তব্যগুলোতে মূলত বাহরাইন, কুয়েত, মুসকাট, দাম্মাম ও সালালাহ রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর দাবি উঠে আসে। চট্টগ্রাম রুট চালুর অনুরোধও ছিল উল্লেখযোগ্য। প্রবাসীরা বলেন, সরাসরি ফ্লাইট হলে খরচ কমবে, ভ্রমণ চাপও কমবে।
অল্প সংখ্যক যাত্রীর ইতিবাচক অভিজ্ঞতা
অল্প কিছু যাত্রী সাম্প্রতিক ভ্রমণে উন্নত সেবা, লাগেজের সঠিক ডেলিভারি এবং কেবিন ক্রুর ভালো ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন। তাদের মত, ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় সেবার মান উন্নতির সম্ভাবনা আছে।
তথ্য-ঘাটতি নিয়ে আক্ষেপ
অনেক ব্যবহারকারী পোস্টের নিচেই বিভিন্ন রুটের টিকিটদর জানতে চান, যা স্পষ্ট করে—বিমানের প্রচারণায় বাস্তবমূল্য উল্লেখ না করা নিয়ে যাত্রীদের হতাশা বাড়ছে।
ব্র্যান্ডিং বনাম বাস্তব অভিজ্ঞতার অসামঞ্জস্য
বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিমানের প্রচারণায় ‘সাশ্রয়ী ভাড়া’র দাবি বাস্তব ভাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ হন। অভিবাসী শ্রমিকদের মন্তব্যে বারবার উঠে আসে—জাতীয় পতাকাবাহী বিমানটিতে ভ্রমণ এখন সাধারণ কর্মজীবী মানুষের জন্য বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলশ্রুতিতে অনেকে বিদেশি এয়ারলাইন্স বা ট্রানজিট রুটকে বেশি নির্ভরযোগ্য বলে মনে করছেন।
উন্নতির সম্ভাবনা রয়ে গেছে
বিক্ষিপ্ত ইতিবাচক মন্তব্যগুলো ইঙ্গিত দেয়—ভাড়া স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, একমুখী ভাড়া বৈষম্য কমানো এবং বাহরাইন–কুয়েতের মতো উচ্চচাহিদার রুট চালু করলে পরিস্থিতি বদলাতে পারে।
পদ্ধতিগত বিশ্লেষণে যা উঠে এসেছে
এনগেজমেন্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, জনপ্রিয় মন্তব্যগুলো মূলত
– ভাড়া বৈষম্য
– রুটের চাহিদা
– সেবা-সংক্রান্ত অসন্তোষ
ঘিরেই আবর্তিত।
এ থেকেই বোঝা যায়, এই ইস্যুগুলো প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
Make Comment
Login to CommentPopular News
Subscribe to News Letter
Latest News
Weather Outlook
Clear
Dhaka, Bangladesh
Wind: 6.8 kmph · Precip: 0 mm · Pressure: 1012 mb
18.1°C
Tue
22.3°C
Wed
22.1°C
Thu
21.6°C