রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের সংবাদ সম্মেলন: পাসপোর্ট, চিকিৎসা, পেনশন সেবা চালুসহ দালাল মুক্ত করার ১৯ দফা দাবি
প্রবাসীদের পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ করা, দালালমুক্ত মেডিকেল সেবা, স্বল্প সুদে ঋণ, বিমানবন্দরে হয়রানি বন্ধ, টিকিটের দাম নিয়ন্ত্রণ ও পেনশন সুবিধাসহ ১৯ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠন ‘আমরা সচেতন রেমিট্যান্সযোদ্ধা’। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়। এতে প্রবাসী সাংবাদিক, ভুক্তভোগী ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রায় দুই কোটি বাংলাদেশি প্রবাসী নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখলেও তাদের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। সরকার পরিবর্তন হলেও প্রবাসী কল্যাণে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিদেশে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা, আইনি সহায়তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের উদ্যোগ এখনও দুর্বল।
সংগঠনের দাবির মধ্যে রয়েছে—
১. পাসপোর্ট সরবরাহ : বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য স্বল্প সময়ে ও হয়রানিমুক্ত পাসপোর্ট সরবরাহ করতে হবে।
২. নিম্ন সুদে ঋণ : ভিসার কপি দিয়ে জামানত ছাড়া, স্বল্প সুদে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে ন্যূনতম ৩ লাখ টাকা ঋণ দিতে হবে।
৩. দালালমুক্ত মেডিকেল সার্ভিস : বিদেশগামী যাত্রীদের মেডিকেল পরীক্ষায় দালালমুক্ত ও সঠিক রিপোর্টের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৪. বিমানবন্দরের সম্মান : যাত্রীদের সম্মান ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করে বিদেশে আসা-যাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে এবং সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
৫. বাংলাদেশি মিশন সেবা : বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলোতে প্রবাসীদের সম্মানজনক ও দ্রুত সেবা দিতে হবে।
৬. বেতন ও সুযোগ সুবিধা পর্যবেক্ষণ : প্রবাসী কর্মীদের কোম্পানিতে বেতন, আবাসন ও অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছে কিনা তা বাংলাদেশি মিশনগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
৭. ভিসা যাচাই : বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার জন্য ভিসা পাঠানোর আগে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির যাচাই-বাছাই করতে হবে।
৮. ব্যয় নিয়ন্ত্রণ : সরকার কর্তৃক নির্ধারিত খরচের মধ্যে কর্মীদের বিদেশ যাওয়ার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৯. টিকিট মূল্য নিয়ন্ত্রণ : সব এয়ারলাইন্সের টিকিট মূল্য গন্তব্যস্থান অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে।
১০. বিশেষায়িত হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ : প্রবাসীদের জন্য সব বিভাগীয় শহরে একটি করে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করতে হবে।
১১. সম্পদ নিরাপত্তা : প্রবাসীদের পরিবারের সম্পদ ও জান-মালের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১২. দক্ষ কর্মী পাঠানো : বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে তাদেরকে কেনো কাজের উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কর্মী পাঠাতে হবে।
১৩. জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ : সব প্রবাসীকে তাদের কর্মরত দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করতে হবে।
১৪. পেনশন সুবিধা : যারা ১০ বছরের বেশি প্রবাসে কর্মরত রয়েছেন, তাদেরকে পেনশনের আওতায় আনতে হবে।
১৫. অসুস্থ কর্মী ও মরদেহের খরচ : অসুস্থ কর্মী ও প্রবাসীর মরদেহ দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে সব খরচ নিয়োগকর্তাকে প্রদান করতে বাধ্য করতে হবে, অন্যথায় বাংলাদেশ সরকারকে নিজ খরচে এই কার্য সম্পাদন করতে হবে।
১৬. গণশুনানি আয়োজন : প্রবাসী কর্মীদের নিয়ে বাংলাদেশি মিশনগুলো প্রতি ৩ মাস পর পর গণশুনানির আয়োজন করতে হবে।
১৭. বৈধতা নিশ্চিতকরণ : বিভিন্ন দেশে যে সব প্রবাসীরা অবৈধ হয়ে আছেন, তাদেরকে বৈধ করার চেষ্টা চালাতে হবে, অন্যথায় তাদেরকে দেশে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৮. অবৈধ পথে কর্মী যাওয়া বন্ধ : যে সব দেশে বাংলাদেশ সরকার কর্মী পাঠায় না, সে সব দেশে অবৈধ পথে ঝুঁকি নিয়ে কর্মী যাওয়া বন্ধ করতে হবে।
১৯. মতবিনিময় : অভিবাসন খাতে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রতি মাসে অন্তত একবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বা সচিবের মতবিনিময় করতে হবে।
Make Comment
Login to CommentPopular News
Subscribe to News Letter
Latest News
Weather Outlook
Clear
Dhaka, Bangladesh
Wind: 6.8 kmph · Precip: 0 mm · Pressure: 1012 mb
18.1°C
Tue
22.3°C
Wed
22.1°C
Thu
21.6°C